Home » জাতীয় » জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ অনুযায়ী টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পাবেন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ

জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ অনুযায়ী টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পাবেন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ

 

নিউটার্ন রিপোর্ট :

জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ অনুযায়ী টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পাবেন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ ।
জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ এর অনুচ্ছেদ ৭(২) ও ৭(৯) অনুযায়ী টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পাবেন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ। ৪ মে, ২০২৫ তারিখ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের রায়ে তা নিশ্চিত হয়।
প্রায় ১২/১৩ বছর যাবত ঝুলে আছে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক/শিক্ষিকাগণের বকেয়া পাওনা টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড স্কেল সমস্যা। যোগদান থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির বেতন স্কেলভুক্ত (১০ম গ্রেডে) ১৯৯৭, ১৯৯৯, ২০০১, ২০০২, ২০০৫, ২০০৬, ২০০৯, ২০১০, ২০১১ সালে নিয়োগ পাওয়া সহকারী শিক্ষক/শিক্ষিকাগণ যোগদান থেকে চাকরিকাল গণনা করে ৪, ৮ ও ১২ বছর পূর্তিতে দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদায় সিলেকশন গ্রেড স্কেল ও টাইম স্কেলের জন্য ২০১৩ ও ২০১৪ সালে আবেদন করেন। আবেদনকারী সহকারী শিক্ষক/ শিক্ষিকাদের সিলেকশন গ্রেড স্কেল ও টাইম স্কেলের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এই পর্যন্ত মোট ৩ (তিন) বার ডিপিসি মিটিং হয়। প্রথম ডিপিসি সভায় উপস্থিত প্রায় সকল সদস্য শিক্ষকগণের সিলেকশন গ্রেড স্কেল ও টাইম স্কেল প্রদানের পক্ষে মত দিলেও অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি শিক্ষকগণের টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড প্রদানের বিপক্ষে মত দেন। সভায় মতভেদ দেখা দেয়ায় সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রথম ডিপিসি সভার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদনকারী সহকারী শিক্ষক/ শিক্ষিকাদের টাইমস্কেল ও সিলেকশনগ্রেড স্কেল প্রদানের বিষয়ে মতামত চায় । অর্থ মন্ত্রণালয় ১৯/০৬/২০১৭ তারিখে প্রদত্ত পত্রে মতামত প্রদান করে । মতামতে অর্থ মন্ত্রণালয় জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ এর ৭(২) ও ৭(৯) অনুচ্ছেদ মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে বলে উল্লেখ করে।
কিন্তু ১৯/০৬/২০১৭ তারিখে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতামত পাওয়ার পর ০৬/০৭/২০১৭ তারিখে অনুষ্ঠিত ডিপিসি মিটিংয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি আবারও সদস্যদের বিপক্ষে মত দেন। এ কারণে শিক্ষক/শিক্ষিকাগণ ১২/১৩ বছর যাবত টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড স্কেল জটিলতায় ভুগছেন।
এমতাবস্তায় নবাবপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জনাব মোঃ আবদুস সালাম বাদী হয়ে বকেয়া সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল প্রাপ্তির জন্য ন্যায় বিচারের প্রত্যাশায় ও জটিলতা নিরসনে সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্টে তিনটি রীট পিটিশন দাখিল করেন (নং৩৫৪৫/২০১৮, ৩৮৪৮/২০১৮ ও ৩৯২৫/২০১৮)। গত ০২/০৫/২০১৯ তারিখ উক্ত রীট পিটিশনগুলোর রায় প্রদান করা হয়। হাই কোর্টের রায়েও জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ এর ৭(২) ও ৭(৯) ধারা মোতাবেক পিটিশনারদের সিলেকশগ্রেড ও টাইমস্কেল প্রদানের নির্দেশ প্রদান করেন।
সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপীল নং ১০৩০/২০২০, ১০৩১/২০২০ ও ১০৩২/২০২০ দায়ের করেন। হাই কোর্টের রায় বহাল রেখে সরকারের করা লিভ টু আপীল খারিজ করে দেন আপীল বিভাগের ১নং বেঞ্চ । ফলে হাই কোর্টের রায় অনুযায়ী জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ এর অনুচ্ছেদ ৭(৯) অনুযায়ী চাকরির ৪ (চার) বছর পূর্তিতে ১টি সিলেকশন গ্রেড, ৭(২) অনুযায়ী চাকরির ৮ (আট) বছর পূর্তিতে ১ম টাইমস্কেল অনুযায়ী চাকরির ১২ (বার) বছর পূর্তিতে ২য় টাইম স্কেল প্রাপ্ত হবেন।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে টাইমস্কেল সিলেকশন গ্রেড বাস্তবায়ন উপকমিটির আহ্বায়ক ও বর্তমানে সবুজবাগ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত মামলার প্রধানবাদী মোঃ আবদুস সালাম বলেন যে, এই রায়ের ফলে ন্যায় বিচার পেয়েছেন শিক্ষকগণ। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ ব্যক্তি ভেদে ১৫ থেকে ২৫ বছর যাবত একই পদে চাকরি করেও তাদের ন্যায্য আর্থিক পাওনা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। এই রায় বাস্তবায়ন হলে তাদের সেই বঞ্চনার অবসান হবে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে টাইমস্কেল সিলেকশন গ্রেড বাস্তবায়ন উপকমিটির সদস্য সচিব ও বর্তমানে মাউশিতে সংযুক্ত কর্মকর্তা মামলার অন্যতমবাদী মাশরুরুল হক তানভীর বলেন, আমরা আশা করি বর্তমান শিক্ষা বান্ধব সরকার এই রায় দ্রুত বাস্তবায়ন করবে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে টাইমস্কেল সিলেকশন গ্রেড বাস্তবায়ন উপকমিটির সদস্য ও বর্তমানে নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত সিনিয়র শিক্ষক মোঃ কামাল উদ্দিন বলেন, আদালতে মামলা জটের কারণে দীর্ঘ প্রায় ৬ বছর পরে শুনানি করতে পেরেছি। দেরিতে হলেও ন্যায় বিচার পাওয়ায় শিক্ষকগণ খুশি। তিনি আরও বলেন যে, সারা দেশের শিক্ষকগণ এই রায় দ্রুত বাস্তবায়ন চায়।

0 Shares