মুক্তাগাছা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর উত্তরা বিএনসিসি এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত ময়মনসিংহ- মুক্তাগাছার মোঃ সামিদ হোসেনের (১৭) পরিবারের পাশে দাঁড়ালো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ।
জানা যায়, মুক্তাগাছার মানকোন গ্রামের বাসিন্দা মো. ফরহাদ মিয়া ও তার স্ত্রী শিল্পী আক্তার ঢাকার টঙ্গীর চেরাগআলীতে বসবাস করেন। পরের বাড়িতে কেয়ারটেকারের কাজ করেন মোঃ ফরহাদ মিয়া এবং একই এলাকায় তার স্ত্রী শিল্পী আক্তার পরের বাড়িতে কাজ করেন। এভাবেই কষ্ট করে দুই ছেলেকে লেখাপড়া করাতেন তারা।
গত ০৫ আগস্ট রাজধানীর উত্তরা আজিমপুর বিএনএস ভবনের সামনে পুলিশের গুলি সামিদের মাথায় এসে লাগে। পাশেই থাকা বন্ধু শাকিল এগিয়ে এলে তার বুকেও গুলি করে পুলিশ। শাকিল বেঁচে থাকলেও কুয়েতে মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় সামিদ হোসেনের। পরের দিন ০৬ আগস্ট মুক্তাগাছা উপজেলার মানকোন বটতলা তেঘুড়ি নিজ গ্রামের বাড়িতে সামিদের দাফন কাজ সম্পন্ন হয়।
সামিদের পরিবার জানায় -সংসারের বড় ছেলেকে হারিয়ে আমরা সর্বশান্ত হয়ে গেছি। আমাদের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। এতো দিন হয়ে গেল কেউ আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি এমনকি কোনো সহযোগিতাও করেননি কেউ। এখন আল্লাহ আমার একমাত্র ভরসা।
বড় ছেলে হারানোর পাহাড় সমান কষ্ট নিয়ে অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে মনের জমানো আক্ষেপের কথাগুলো বলেন পুলিশের গুলিতে নিহত মুক্তাগাছা উপজেলার মানকোন গ্রামের বাসিন্দা মো. ফরহাদ মিয়া ও তার স্ত্রী শিল্পী আক্তার।
ছেলের শোকে পাথর বাবা ফরহাদ মিয়া আরো জানান, দুই ছেলের মধ্যে সামিদ আমার বড় ছেলে। ওকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার বানাতে কিশোরগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশন কোর্সে ভর্তি করা হয়। পরের বাড়িতে কাজ করে দুই ছেলের লেখাপড়ার খরচ চালায়। বড় ছেলেকে নিয়ে পরিবারের অনেক স্বপ্ন ছিল কিন্তু এভাবে আমাদের স্বপ্ন মাটিতে মিশে যাবে কল্পনাও করিনি। আমি সকলের কাছে আমার পরিবারের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের এবং আমাদেরকে সার্বিক সাহায্য সহযোগিতার দাবি রাখছি।
এছাড়া আমার একটি ছোট ছেলে আছে (সাকিব-১৫) সে নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। তার চাকরির ক্ষেত্রে বিষয়টি যেন আমলে নেয়া হয়। সর্বোপরি আমার ছেলের মৃত্যু শহিদের স্বীকৃতি দাবি রাখছি সেই সাথে আমার ছেলের অপ্রত্যাশিত মৃত্যুর দায়ভার রাষ্ট্রকে নিয়ে সাংবিধানিক আইন-কানুন অনুযায়ী দোষিদের আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
এবার সামিদের পরিবারের পাশে দাঁড়ালো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার নির্দেশনায় মো: সামিদ হোসেনের শোকাহত পরিবারকে সমবেদনা জ্ঞ্যাপন, সামিদের গ্রামের বাড়ির সড়ক নিহত শহীদ সামিদের নামে নামকরণ ও তারেক রহমানের উপহার সামগ্রী এবং নগদ অর্থ প্রদান করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পরিবার এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিল মুক্তাগাছা পৌর ছাত্রদল।