মুক্তাগাছা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), মুক্তাগাছা এর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুবান্ধব ওয়াশ ব্লক পুন:নির্মাণ করেছে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। সম্প্রতি মুক্তাগাছা উপজেলাধীন সৈয়দগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নব নির্মিত ওয়াশ ব্লকের ব্যবহার অনুপযোগী সিড়ি ও র্যাম্প (বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের চলাচলের জন্য) ভেঙ্গে পুন:নির্মাণ করা হয়। ফলে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা সহজ ও স্বাভাবিকভাবে ওয়াশ ব্লক ব্যবহার করতে পারছেন।
তৃতীয় শ্রেণির বুদ্ধি ও শারীরিকভাবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থী হাজেরা আক্তার সওদা এর মা জানান, ‘চলাচল সুবিধা সম্পন্ন ওয়াশরুমে যাওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় আমার মেয়ে নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসতো না। কিন্তু বর্তমানে সে নিয়মিত ক্লাস করছে। নিজে নিজেই ওয়াশরুমসহ শ্রেণিকক্ষে চলাচল করছে।’
জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে উক্ত ওয়াশ ব্লকটি নির্মাণের জন্য অনুমোদিত হয়। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় ২ বছরেও কাজ শুরু করেননি উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। বিষয়টি অ্যাকটিভ সিটিজেন্স গ্রুপ (এসিজি) সদস্যদের দ্বারা সনাক মুক্তাগাছার নজরে আসলে ২০২২ সালে সনাক সদস্যগণ এটি দ্রুত নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সনাক কর্তৃক বার বার যোগাযোগ ও তাগিদ দেওয়ার পর উক্ত দপ্তরটি জুন ২০২২ এ এর নির্মাণ কাজ শুরু করেন। যা আগস্ট ২০২৩ এ শেষ হয়। কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায়, নির্মিত ওয়াশ ব্লকের সিড়ি ও র্যাম্প বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের চলাচলের জন্য সম্পূর্ণ অনুপযোগী।
এঅবস্থায় সনাক কর্তৃক উক্ত ওয়াশ ব্লকের সিড়ি ও র্যাম্প ভেঙ্গে পুন:নির্মাণের জন্য জোর দাবী জানানো হয়। কিন্তু জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কালক্ষেপণ করতে থাকেন। ইয়েস সদস্য কর্তৃক তথ্য প্রাপ্তির আবেদনের মাধ্যমে তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এর প্রয়োগ, অব্যাহতভাবে যোগাযোগ ও অধিপরামর্শের ফলে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ফেব্রুয়ারি ২০২৪ এ পূর্বে নির্মিত সিড়ি ও র্যাম্প ভেঙ্গে পুন:নির্মাণ করেন এবং শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আল-আজীম জানান, ‘ওয়াশবøকটি নির্মাণ ও ব্যবহার উপযোগী সিড়ি ও র্যাম্প পুন:নির্মাণে ব্যাপক ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। সনাক মুক্তাগাছার অব্যাহত সহযোগিতা ছিল বলেই এটি শিক্ষার্থীরা এখন ব্যবহার করতে পারছে। অন্যথায় আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় কতদিন পর এটি সম্পন্ন হতো বা ব্যবহার উপযোগী হতো কিনা তা নিয়ে ব্যাপক শঙ্কা ছিল। বর্তমানে ১২৩ জন শিক্ষার্থী ও ২ জন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু এটি ব্যবহার করছেন।’ তিনি সনাক মুক্তাগাছার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।