সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে এবার বৈশাখ মাস শেষ হওয়ার আগেই হাওরের বোরো ধান কাটা শতভাগ শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় কৃষি বিভাগ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে নন হাওরে বিচ্ছিন্ন কিছু জমির ধান কাটা বাকি রয়েছে। এসব জমির ধান দুই তিনদিনের মধ্যে কর্তন সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
এদিকে বৈশাখের প্রথম দিকে আবহাওয়ার আগাম বার্তায় মাঠ ভরা সোনার ধান নিয়ে কৃষকদের মধ্যে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত প্রাকৃতিক কোন বিপর্যয় না ঘটনায় ভালোয় ভালোয় ধান কাটতে পেরে স্বস্তির নি:শ্বাস নিচ্ছেন কৃষকরা। সেই সঙ্গে কষ্টার্জিত ফসলে গোলা ভরছে। সেই আনন্দে হাসছে কৃষক পরিবার। বড় বড় কৃষক পরিবার এখনও ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছোট ও মাঝারি আকারের কৃষক পরিবারের বোরোর ব্যস্ততা কমেছে। এর মধ্যেই তারা তাদের ক্ষেতের পাকা ফসল ঘরে তুলতে পেরে আনন্দে হাসছেন। এবার ফসলের ফলন ভালো হওয়ায় আর নিরাপদে ঘরে ধান তুলতে পেরে খুশি কৃষক। এদিকে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।
মইয়ার হাওরের ইকড়ছই গ্রামের কৃষক ছাতির আলী বলেন, এবার ১০ কেদার জমিতে ব্রি-২৯ জাতের ধান আবাদ করেছিলাম। কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটনায় সব জমির ধান কেটে বৈশাখ মাস শেষ হাওয়ার আগেই গোলায় তুলতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। প্রতি কেদারে কমপক্ষে ২০ মণ করে ধান মিলেছে বলে এই কৃষক জানিয়েছেন।
নলুয়া হাওরের কৃষক আসিক মিয়া বলেন, এবছর ৩৬ কেদার জমিতে চাষাবাদ করেছি। ধান কাটা শেষ হয়েছে। কিছু জমির ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ চলছে। ভালোয় ভালোয় এবার ফসল কর্তন করতে পেরে আমরা হাওরবাসী খুশি।
ভুরাখালি গ্রামের এক কৃষক বলেন, বৈশাখ মাস মানেই বোরো ধানের উৎসব। পুরো বৈশাখজুড়েই ঘরে ফসল তোলা নিয়ে ব্যস্ত থাকি আমরা। এবার বৈশাখ মাস শেষ হওয়ার আগেই শতভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়ে গেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকার ফলে কৃষকরা স্বস্তিতে গোলায় ধান তুলছেন।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবছর জগন্নাথপুরের ছোট বড় ১৫টি হাওরে ২০ হাজার ৪শ হেক্টর জমিনে বোরো আবাদ করা হয়। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৭ মেট্রিক টন। যা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ বলেন, জগন্নাথপুরে ছোট বড় সব ক’টি হাওরের শতভাগ ধান কাটার কাজ শেষ। শুধু কিছু কিছু এলাকায় বাড়ির পাশের বিচ্ছিন্ন কিছু জমির ধান ১ শতাংশের মতো কাটা বাকি রয়েছে। আশা করছি এক দুইদিনের মধ্যে সম্পন্ন হয়ে যাবে। তিনি বলেন, এবার বাম্পার ফলনে খুশি কৃষক পরিবার। পাশাপাশি আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় দ্রুত সময়ের মধ্যে ধান গোলায় তুলছেন কৃষকরা। এবার আমাদের প্রত্যাশা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
