নিউটার্ন জীবনধারা ডেস্ক : ইসলামে নামাজ কেবল শরীরের ইবাদত নয়, বরং তা মুমিনের আত্মিক সংযোগ, শৃঙ্খলা ও ঐক্যেরও প্রতীক। এ ইবাদতে সময়ানুবর্তিতা, জামা‘আতের ঐক্য এবং আজানের আহ্বানে সাড়া দেওয়া; সবকিছুই অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ কাজ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজের এই প্রতিটি ধাপের মাহাত্ম্য এমনভাবে বর্ণনা করেছেন, যা জানলে একজন মুসলমান কখনো নামাজে গাফলতিতে লিপ্ত হতে পারবে না-
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَوْ يَعْلَمُ النَّاسُ مَا فِي النِّدَآءِ وَالصَّفِّ الأَوَّلِ ثُمَّ لَمْ يَجِدُوْا إِلَّا أَنْ يَسْتَهِمُوْا عَلَيْهِ لَاسْتَهَمُوْا وَلَوْ يَعْلَمُوْنَ مَا فِي التَّهْجِيْرِ لَاسْتَبَقُوْا إِلَيْهِ وَلَوْ يَعْلَمُوْنَ مَا فِي الْعَتَمَةِ وَالصُّبْحِ لَاتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْوًا.
আবূ হুরাইরাহ্ (রা.) হতে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আজান ও প্রথম কাতারের মর্যাদা মানুষ যদি জানত আর কুর‘আ নিক্ষেপ ব্যতীত সে সুযোগ তারা না পেত, তাহলে কুর‘আ নিক্ষেপ করত (অর্থাৎ লটারির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিত), তেমনি আগে ভাগে জামাআতে শরীক হবার মর্যাদা যদি তারা জানত তাহলে তারা সেদিকে ছুটে যেত।
তেমনি ঈশা ও ফজরের জামাআতে হাজির হবার মর্যাদা যদি তারা জানত তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা তাতে হাজির হতো। (বুখারি, হাদিস: ২৬৮৯)
হাদিসের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা
এই হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজের তিনটি বিশেষ দিকের গুরুত্ব ও মহিমা তুলে ধরেছেন—
১️. আযান দেওয়া: ইসলামী সমাজে আযান হচ্ছে ঈমানের ঘোষণাপত্র। এর মাধ্যমে মানুষকে আল্লাহর ইবাদতের দিকে আহ্বান করা হয়, তাই আযানদাতা মহান পুরস্কারের অধিকারী।
২️. প্রথম কাতারে দাঁড়ানো: প্রথম সারি আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়।
এটি মুসলিম ঐক্য, আত্মনিবেদন ও শৃঙ্খলার প্রতীক।
৩️. ঈশা ও ফজরের জামাআত: এই দুই নামাজে শীতলতা, অন্ধকার ও কষ্টের কারণে অংশগ্রহণ কঠিন; তাই এতে উপস্থিতদের জন্য পুরস্কারও তুলনাহীন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) “হামাগুড়ি দিয়ে হলেও হাজির হতো” বাক্যটির মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছেন—এ নামাজগুলোতে উপস্থিতি শুধু কর্তব্য নয়, বরং তা ঈমান ও জান্নাতের মর্যাদার পরিমাপক। কাজেই যে কেউ তার সর্বময় চেষ্টা করে হলেও সেগুলোয় উপস্থিত হতে চাইত।
নিউটার্ন/এআর
Newturn24.com Latest News Portal