Home » সারাদেশ » গণকবরে ভরা গ্রাম বেনাপোলের‘গয়ড়া’

গণকবরে ভরা গ্রাম বেনাপোলের‘গয়ড়া’

 

বেনাপোল প্রতিনিধি : পাকহানাদার বাহিনীর নৃশংসতায়-পারিবারিক গণকবরে ভরা যশোরের বেনাপোলের একটি গ্রাম গয়ড়া। মুক্তিযুদ্ধে পাক সেনারা একদিনেই বেসামরিক ৬৩জন নারী শিশু ও পুরুষকে নৃশংশহভাবে হত্যা করে। একই কবরে সমাহিত করা হয় ৫/৭জনকে। এক নারীকে ১০পাক সেনা পালাক্রমে ধর্ষণ শেষে ছোট ৬মাসের শিশুকেও হত্যা করে তারা।২৪ এপ্রিল বেনাপোলের স্বরণীয় দিন। আজও অযত্ন ,অবহেলা ও সচেতনার অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে এসব গণকবর। বিজয়ের ৫১বছরেও গণকবরে ভরা এই গ্রামে আজো তৈরি হয়নি কোনো স্মৃতিফলক সংরক্ষিত হয়নি কবরগুলো।
সেদিনের কথা মনে উঠলে আজও গা শিউরে ওঠে-ভুলতে পারেনি স্বজন ও স্থানীয়রা-গয়ড়া গ্রামের সেদিনের ইতিহাস আজ বিলিন হতে চলেছে। তাদের স্মৃতি সংরক্ষণে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন স্বজন ও স্থানীয়রা।
দক্ষিণ পশ্চিম রণাঙ্গনের সদর দফতর বেনাপোলের কাগজপুকুর ও গয়ড়ায় পাকসেনা ও মুক্তিবাহিনীর মধ্যে সম্মুখ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে কাগজপুকুরের পতন ঘটে।কিন্তু বেনাপোলের পতন ঘটেনি কোনদিন।একদিনেই ১৯৭১ সালের ২৪ এপ্রিল ব্রাশ ফায়ারে গয়ড়া গ্রামের ৬৩ জনকে হত্যা করে পাকিস্থানিরা। পুড়িয়ে দেয়া হয় ওই গ্রামের প্রায় সবার বাড়ি ঘর। যশোরের সীমান্তবর্তী বেনাপোল সদর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে গয়ড়া গ্রাম।এই গ্রামটি ছিল ৮ নম্বর বেনাপোল সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন আবদুল হালিম ও ক্যাপ্টেন তৌফিক-ই-ইলাহী-সেক্টরের আওতায়। পনের দিন ধরে চলে যুদ্ধ,এযুদ্ধে মারা যায় দেড় শতাধিক সাধারণ মানুষ।সামনা সামনি যুদ্ধে পাকিস্থানী ১৫০ খানসেনা নিহত হয়।১০জন মুক্তিযোদ্ধা শাহাদৎ বরন করেন।গয়ড়া গ্রামের মসজিদের পশ্চিম পাশে,কিতাব আলির বাড়িতে তৈরি করা মর্চের ভিতর,নূর মোহাম্মদের বাড়ির পুকুর পাড়ে,বাবর আলির বাড়ির প্রাচিরের কোনায় গণকবর দেয়া হয়। আজ এসব কবরের স্মৃতিচিহ্ন বিলীন হয়ে যাচ্ছে। পারিবারিক গণকবরে ভরা এ গ্রামে নেই কোনো স্মৃতিফলক। স্থানীয়রা পরে কাগজপুকুর বাজারে ও উলাশিতে ২টি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করেছে। কবর সংরক্ষণ সহ স্মৃতি সৌধ নির্মাণের দাবি ।
অনেক গণ কবর সংরক্ষণে উদ্যোগ নিলেও ঐতিহাসিক এই গণকবরটি সংসক্ষণ হয়নি আজও। সরকারের সহযোগিতা চান মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও মুক্তিযোদ্ধারা ।
শার্শা উপজেলা বিভিন্ন স্পটে গণ কবর রয়েছে অনেকগুলো সংরক্ষণ ও স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। অরিক্ষিত গণকবরগুলো সংরক্ষণের জন্য মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় ও পাবলিক ওয়ার্চ ডেভলপমেন্ট কাজ করে যাচ্ছে। অচিরেই এসব গনকবর সংরক্ষন করা হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহি প্রকৌশলী এম এম এ মামুন।
জনপ্রতিনিধি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় ও প্রশাসনের কাছে এসব গণকবর সরক্ষণ ও সম্মৃতিসৌধ নির্মাণের জোর দাবি জানান স্বজন ও স্থাণীয়রাসহ মৃুক্তিযোদ্ধারা ।

0 Shares