Home » জাতীয় » বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ আহ্‌সান উল্লাহ মাস্টারের শাহাদতবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ আহ্‌সান উল্লাহ মাস্টারের শাহাদতবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

 

ঢাকা :

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল ৭ মে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ আহ্‌সান উল্লাহ মাস্টারের শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :

“স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত জনপ্রিয় শ্রমিক নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আহ্‌সান উল্লাহ মাস্টার-এর ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার স্মৃতির প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।

প্রয়াত এই শ্রমিক নেতার জীবন ও কর্ম নিয়ে ‘জননন্দিত শ্রমিক নেতা’ শীর্ষক একটি স্মরণিকা প্রকাশ করার উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।

শহিদ আহ্‌সান উল্লাহ মাস্টার গাজীপুর-২ (গাজীপুর সদর-টঙ্গী) আসন হতে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে দু’বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯০ সালে গাজীপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ১৯৮৩ ও ১৯৮৭ সালে দু’দফা পূবাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এই জননেতা ছিলেন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য। তিনি জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)-এর চেয়ারম্যান এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সদস্য হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন। আজীবন মানবসেবায় নিয়োজিত এই ভাওয়াল বীর তার বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে শিক্ষক হিসেবেই পরিচয় দিতে ভালোবাসতেন, তিনি আমৃত্যু তার নিজের প্রতিষ্ঠিত নোয়াগাঁও এমএ মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তিনি শিক্ষক সমিতিসহ বিভিন্ন সমাজসেবামূলক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান/সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। ১৯৯২ সালে উপজেলা পরিষদ বিলোপের পর উপজেলা চেয়ারম্যান সমিতির আহ্বায়ক হিসেবে উপজেলা পরিষদের পক্ষে মামলা করেন ও দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে তিনি গ্রেফতার হন এবং কারাবরণ করেন।

শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষের সংগ্রামী জননেতা আহ্‌সান উল্লাহ মাস্টারের স্বপ্ন ছিল মাদক-সন্ত্রাস মুক্ত টঙ্গী-গাজীপুর গড়ার। কালে কালে তিনি হয়ে উঠেন জঙ্গী-সন্ত্রাসের মদদদাতা বিএনপি-জামাত জোট সরকারের পথের কাঁটা। হাওয়া ভবনের প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিতে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতাদের নিশ্চিহ্ন করার নীল-নকশা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বিএনপি-জামাত মদদপুষ্ট একদল সন্ত্রাসী ২০০৪ সালের ৭ মে নোয়াগাঁও এমএ মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আহ্‌সান উল্লাহ মাস্টারকে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করে। একজন প্রিয় শিক্ষককে সন্ত্রাসীদের গুলি থেকে বাঁচাতে বুক পেতে দিয়েছিল ছাত্র ওমর ফারুক রতন, সেও মৃত্যুবরণ করেছে। শুধু তাই নয়, আহ্‌সান উল্লাহ মাস্টার খুন হওয়ার পর শোকার্ত, বিক্ষুব্ধ, প্রতিবাদী জনতার ওপর গুলি চালিয়ে আরো দু’জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে জোট সরকারের পুলিশ, গ্রেফতার করে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের হাজারো নেতা-কর্মিকে। সেই সরকারের বাহিনী এই হত্যাকাণ্ডের প্রধান সাক্ষীকেও বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্যক্রম এখনও চলছে। সবাই প্রত্যাশা করে, বিচারকার্য চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়ে বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর হবে।

আমি এই দিনে শহিদ আহ্‌সান উল্লাহ মাস্টারের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

শহিদ আহ্‌সান উল্লাহ মাস্টার-এর মৃত্যুবার্ষিকী সুষ্ঠুভাবে পালিত হোক-এটাই আমার প্রত্যাশা।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”
-ত.বি.

0 Shares