Home » জাতীয় » সীতাকুণ্ডে রাতের আঁধারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দখল, থানায় অভিযোগ দায়ের

সীতাকুণ্ডে রাতের আঁধারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দখল, থানায় অভিযোগ দায়ের

 

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি:
সীতাকুণ্ডে চলমান লকডাউনকে পু্ঁজি করে ১৯৩৫ সালে প্রতিষ্ঠিত সীতাকুণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দখলের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দখলকারীরা কৌমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যবহৃত ১০০ জোড়া হাই বেঞ্চ, চেয়ার ৫টি, টেবিল ৫টি, পানির কল লুট ও একটি টিন শেড স্কুল ভবন ভেঙ্গে দখল করে ফেলে। বিষয়টি জানার পর সোমবার সকালে স্কুল সংশ্লিষ্টরা সীতাকুণ্ড মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

জানা যায়, সীতাকুণ্ডে ১৯৩৫ সালে জৈনকা সুভাষিণী দত্ত (তখনকার) অজপাড়াগাঁয় শিক্ষার আলো ছড়াতে নিজেই শিক্ষকতার মধ্যে দিয়ে সীতাকুণ্ড পৌরসদরের ৪নং ওয়ার্ড কলেজ রোডের উত্তর পাশে দত্ত বাড়ি নামে নামকরণ করে বেসরকারিভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্কুল চালু করেন। স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭২ সালে জাতীয়করণের মধ্য দিয়ে স্কুলটি সরকারি করণ করা হয়। এরপর থেকে স্কুলটি আজ পর্যন্ত উপজেলায় ও জেলা পর্যায়ে মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করে আসছিল। যার ধারাবাহিকতায় এখনো অব্যাহত রয়েছে। স্কুলটিতে শিশু শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত মোট ৭৪৭জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
কিন্তু স্থানীয় দখলদার চঞ্চল দত্ত গং সরকার ঘোষিত লকডাউন অমান্য করে এবং স্কুল ছুটিকে পুঁজি করে শনিবার ও রবিবার রাতের যেকোন সময় বি.এস খতিয়ানভুক্ত স্কুলের একটি টিন শেডের ঘর দখল করে এবং সরকারি সম্পত্তি স্কুলের যাবতীয় আসবাবপত্রসহ স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যবহৃত একটি পানির কল লুট করে নিয়ে যায়। গত সোমবার স্কুল সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি অবগত হয়ে সীতাকুণ্ড মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পরবর্তীতে পুলিশ ঘটনাস্থল তদন্তপুর্বক পরিদর্শন করে। এ ঘটনার সত্যতার প্রমাণ পেলেও এখনো পর্যন্ত কাউকে আটক করেনি পুলিশ।

দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে, দখলকারীদের একজন তৃপ্তি দত্ত বলেন,“আপনি ফোনে কথা না বলে বাসায় আসেন, এভাবে ফোনে বক্তব্য দেয়া যায় না। আর এই জায়গা নিয়ে আদালতে মামলা রয়েছে। মামলাধীন বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করা সঠিক নয় বলে জানান তিনি।

দখলের বিষয়ে অত্র স্কুলের প্রধান শিক্ষক তৃপ্তি রানী ধর বলেন,“লকডাউন ও স্কুল ছুটিকে পুঁজি করে দখলদার চঞ্চল দত্ত, মদন কুমার দত্তের পুত্র পুলক দত্ত ও পুত্র বধূ তৃপ্তি দত্ত রাতের আধাঁরে স্কুলের মূল ফটক পরিবর্তন করে নিজস্ব একটি গেইট নির্মাণ করেন। গেইটের ভিতরে কৌশলে রাতে লোকজন নিয়ে স্কুলের নামে বিএস খতিয়ানভুক্ত একটি টিন শেডের ঘর দখল পরবর্তী মালামাল নিয়ে যায়। একইভাবে সরকারি সম্পত্তি স্কুলের শতাধিক চেয়ার-টেবিল ও পানির কল লুট করে তারা। আমি বিষয়টি আমার উপজেলা শিক্ষা অফিস, ইউএনও মহোদয়কে অবগত করে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি বলে জানান ।

এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সুমন বনিক বলেন,“অভিযোগের আলোকে আমরা স্কুলের জায়গাটি পরিদর্শন করেছি, যেহেতু জায়গা সংক্রান্ত বিষয়, তাই আমি ইউএনও স্যারকে অবগত করলে, উনি স্থানীয় কাউন্সিলর, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও দখলদারদের সাথে বৈঠক করার কথা ছিল বলে জানান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো.নুরুচ্ছফা বলেন,“ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ১৯৩৫ সালে থেকে আজ পর্যন্ত স্কুলটিতে শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কোন মামলা-মোকাদ্দমা থাকলে তা মূল নিস্পত্তির পর সমাপ্ত হবে। কিন্তু এভাবে রাতের আঁধারে সরকারি সম্পত্তি দখল,লুট জঘন্য অপরাধ। আমরা আইনগতভাবে অগ্রসর হচ্ছি বলে তিনি জানিয়েছেন।

তবে এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মিল্টন রায়কে ফোন করলে উনি জেলা মিটিংয়ে থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

0 Shares