Home » জাতীয় » সুনামগঞ্জে একাধিক মন্দির ও বসতবাড়িতে চুরি, জনমনে আতঙ্ক

সুনামগঞ্জে একাধিক মন্দির ও বসতবাড়িতে চুরি, জনমনে আতঙ্ক

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা গ্রামে একের পর এক চুরির ঘটনায় চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা। সাম্প্রতিক সময়ে গ্রামের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিক এসব চুরির ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত চোরাই মালামাল কিংবা চোরচক্রকে শনাক্ত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সাচনা গ্রামে একের পর এক একাধিক চুরি সংঘঠিত হওয়ার বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জামালগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম।
জানা গেছে, সম্প্রতি চুরির শিকার হয়েছেন সাচনা গ্রামের রামকৃষ্ণ মিশনের মন্দির, সাংবাদিক দেবব্রত ঘোষ চৌধুরীর বাড়ি, শিক্ষক নবগোপাল রায়, জামালগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অর্ধেন্দু ঘোষ চৌধুরী, সাচনা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক প্রান্তোষ ঘোষ চৌধুরী এবং জামালগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক দীনেশ চন্দ্র দাশের বাড়ি। এছাড়া নিগমানন্দ সরস্বতী মন্দিরের দানবাক্স ভেঙে নগদ অর্থও চুরি হয়েছে। এ সময় চোরেরা মূলত ঘরের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে আলমারির লকার ও কাসার বাসনপত্র চুরি করে নিয়ে যায়।
গত বছর ৫ আগস্টের পর প্রান্তোষ ঘোষ চৌধুরী ও নবগোপাল রায়ের বাড়িতে চুরি হয়। চলতি বছরের জুলাই মাসে চুরি হয় অর্ধেন্দু ঘোষ চৌধুরীর বাড়িতে। সর্বশেষ গত ১২ সেপ্টেম্বর রাতে সাংবাদিক দেবব্রত ঘোষ চৌধুরীর বাড়িতে চুরি হলে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এরপর মাত্র পাঁচ দিন পর রামকৃষ্ণ মিশনের মন্দিরে চুরি ঘটে। আর গত শনিবার রাতে দীনেশ চন্দ্র দাশের বাড়ি থেকে স্বর্ণালঙ্কারসহ বাসনপত্র নিয়ে যায় চোরেরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায়ই রাতের অন্ধকারে চোরচক্রের তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। গ্রামের পিছনে মাদকাসক্তদের আড্ডাও বেড়ে গেছে। এতে গ্রামবাসী আতঙ্কে রাত জেগে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। বিশেষ করে শিক্ষক, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের বাড়ি টার্গেট হওয়ায় সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। গ্রামের বিভিন্ন স্থানে রাতের আঁধারে মাদকাসক্তদের চলাফেরা বাড়ছে বলেও স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। গ্রামবাসীরা জানান, শিক্ষক, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের বাড়িই বেশি টার্গেট হওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ ও উদ্বেগ বাড়ছে। নিরাপত্তার ঘাটতি ও পুলিশের উদাসীনতায় গ্রামে রাতের ঘুম হারাম হয়ে উঠেছে।
সাংবাদিক দেবব্রত ঘোষ চৌধুরী বলেন, চোরেরা তালা ভেঙে ঢুকে ঘরের আলমারি ভেঙে জিনিসপত্র তল্লাশি করেছে। তারা মূলত মূল্যবান বাসনপত্রই লক্ষ্য করছে। জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রবীন্দ্র কুমার দাস বলেন, একের পর এক চুরির ঘটনায় এলাকার সাধারণ মানুষ বেশ আতঙ্কে আছে। আগে সাচনা গ্রামে কখনো এরকম ধারাবাহিক চুরির ঘটনা ঘটেনি। তবে প্রশাসন এসব ঘটনা আন্তরিকতার সাথে খতিয়ে দেখছে।
রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের সাধারণ সম্পাদক বাবু অনন্ত পাল বলেন, রামকৃষ্ণ মিশনের মন্দির, নিগমানন্দ সরস্বতী মন্দিরের দানবাক্স ভেঙে নগদ অর্থও চুরি হয়েছে। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। একের পর এক মন্দির ও বাসা-বাড়িতে চুরির ঘটনায় আমাদের জনমনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। জামালগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের অভিযান চলছে। সার্কেল স্যারসহ আমরা সাচনায় যাচ্ছি। সবগুলো চুরির ঘটনার ধরন প্রায় একই। আশা করছি, খুব শিগগিরই চোর সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করতে পারব।

0 Shares