Home » জাতীয় » কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী, ঈদ পুনর্মিলনী উদযাপন

কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী, ঈদ পুনর্মিলনী উদযাপন

 

 

মোহাম্মদ জাবেদ হাসান অমি, বাঁশখালী :

বাংলাদেশের জাতীয় কবি এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অন্যতম প্রাণপুরুষ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম সাতকানিয়া উপজেলায় চরতী ইউনিয়নে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী ও ঈদ পুনর্মিলনি অনুষ্ঠান করে কবি কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতি সংসদ, চরতী।

শুক্রবার (২১ মে) চট্টগ্রাম সাতকানিয়া তালগাঁও আল হেলাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী ও ঈদ পুনর্মিলনি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে। বাবার নাম কাজী ফকির আহমেদ, মা জাহেদা খাতুন। দরিদ্র পরিবারে জন্মের পর দুঃখ-দারিদ্র্য ছিল তার নিত্যসঙ্গী। তার ডাকনাম দুখু মিয়া।

কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার পথিকৃৎ। তিনি কবিতা, গান ও উপন্যাসে সাম্প্রদায়িকতা, সামন্তবাদ, সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।

অনন্ত প্রেরণার উৎস নজরুল কোমল আর কঠিনে মেশানো এক অপূর্ব ব্যক্তিত্ব। প্রেমে পূর্ণ, বেদনায় নীল। আবার প্রতিবাদে ঊর্মিমাতাল।

উল্লেখ্য, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতি সংসদ চরতির উদ্যোগে আয়োজিত কবির জন্মবার্ষিকী ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে হিফজুর রহমান ইমনের উপস্থাপনায় ,অত্র অনুষ্ঠানের সভাপতি ডাঃমুহাম্মদ রেজাউল করিম, প্রধান অতিথিঃ আখতারুজ্জামান কায়সার, প্রধান বক্তাঃ জরজিস আহমদ চৌধুরী, বিশেষ অতিথিদের মধ্যে ছিলেনঃ মাস্টার আবুল হোসাইন, মওলানা আবদুর রহমান।
আরো উপস্থিত ছিলেন, নুরুল আবছার চৌধুরী,লোকমান আহমদ সিকদার, মওলানা এরফানুল হক সিকদার, ব্যাংকার জয়নুল আবেদীন, খোরশেদুল আলম হিরু,মাষ্টার আবুল মনছুর,মাষ্টার নোমান, মাওলানা নুরুল আমিন,বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আহমেদ রেজা খান আজমান, মাস্টার নুরুল ইসলাম শাকিব,শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম, শিল্পী কায়ছার হামিদ, প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন ব্যাংকার আবু ছৈয়দ । গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও বিভিন্ন তরুণ, মেধাবী ছাত্ররা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান বক্তা আয়কর, ভ্যাট ও কোম্পানি আইন উপদেষ্টা জরজিস আহমেদ চৌধুরী বলেন, কবি নজরুল ধ্যানে-জ্ঞানে, নিঃশ্বাসে-বিশ্বাসে, চিন্তাচেতনায় ছিলেন পুরোদস্তুর মানবতাবাদী কবি। কবিতায়, গানে, গদ্যে সর্বত্র তার এই দৃষ্টিভঙ্গি উৎকীর্ণ। শোষিত-বঞ্চিত মানুষকে তিনি উদ্বুদ্ধ করেছেন সাম্য ও ন্যায়ের বন্ধনে এক হয়ে শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে লিপ্ত হতে।১৩০৬ থেকে ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ। অঙ্কের হিসাবে তার জীবনকাল ৭৭ বছরের। সৃষ্টিশীল ছিলেন মাত্র ২২ বছর। এই ২২ বছরের সাহিত্যজীবনে তার বিপুল সৃজনকর্ম বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। তার ছড়ানো দ্রোহী চেতনা কাঁপিয়ে দেয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের ভিত। ইসলামি ঐতিহ্য কাজী নজরুল ইসলামকে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করেছিল। ইসলামের পুনর্জাগরণ বা মুসলিম ঐতিহ্য নজরুলের কবিতায় বিপুলভাবে সংবর্ধিত হয়েছিল। তিনি সুফিতত্ত্ব বা সুফিবাদ দ্বারাও প্রভাবান্বিত হয়েছিলেন। ইসলামকে নজরুল তার বিশ্বাসে মণ্ডিত করে প্রকাশ করেছেন।
কাজী নজরুল ইসলাম যেমন শোষিত মানুষের কবি, বিদ্রোহের কবি, মানবিকতার কবি, তেমনি ইসলামি আকিদা-বিশ্বাস ও ইসলামি সাম্যবাদেরও কবি। ইসলামকে কবি মনে প্রাণে গ্রহণ করেছেন।
নজরুলের ইসলামি গানের মৌলিক বৈশিষ্ট্য আমাদের দারুণভাবে মুগ্ধ করে এবং ধর্মীয় ভাবাবেগে আপ্লুত করে। তার ইসলামি চৈতন্য আমাদের আলোড়িত করে। তিনি তার বিশ্বাসকেই মণ্ডিত করেছেন ইসলামি গানে।

0 Shares