Home » জাতীয় » কোভিড-১৯: ভারতে দৈনিক সনাক্ত আরও কমেছে, বেড়েছে মৃত্যু

কোভিড-১৯: ভারতে দৈনিক সনাক্ত আরও কমেছে, বেড়েছে মৃত্যু

 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারতে আগের দিনগুলোর তুলনায় দৈনিক সনাক্ত রোগীর সংখ্যা আরও কমেছে, কিন্তু এদিন একদিন আগের তুলনায় মৃত্যু বেড়েছে।

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকালের আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে তিন লাখ ২৯ হাজার ৯৪২ জন নতুন রোগী সনাক্ত হয়েছে আর মৃত্যু হয়েছে ৩৮৭৬ জনের।

এর আগে টানা চার দিন ধরে দেশটিতে দৈনিক চার লাখের বেশি রোগী সনাক্ত হওয়ার পর সোমবার সংখ্যাটি কমে তিন লাখ ৬৬ হাজারে নেমেছিল, এবার সংখ্যাটি আরও হ্রাস পেল।

দেশটিতে টানা দুই দিন ধরে চার হাজারের বেশি রোগীর মৃত্যুর হওয়ার পর সোমবার সংখ্যাটি নেমে ৩৭৫৪ জন হয়েছিল, কিন্তু একদিন পরই তা আবার বৃদ্ধি পেল।

নতুন রোগীদের নিয়ে ভারতে সনাক্ত মোট করোনভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা দুই কোটি ৯২ হাজার ৫১৭ জনে দাঁড়িয়েছে। সনাক্ত রোগীর সংখ্যায় দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে আছে।

মোট মৃত্যুর সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের পর তৃতীয় স্থানে থাকা ভারতে ‍মৃতের সংখ্যা দুই লাখ ৪৯ হাজার ৯৯২ জনে দাঁড়িয়েছে; এতে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, আর একদিনের মধ্যেই দেশটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা আড়াই লাখ ছাড়িয়ে যাবে।

বিশ্বের দ্বিতীয় জনবহুল দেশটিতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা সরকারি এসব হিসাবের চেয়ে আরও অনেক বেশি বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। অনেক ঘটনাই সরকারের হিসাবে আসছে না বলে মনে করেন তারা।

দেশটির সংক্রমিতদের মধ্যে এক কোটি ৯০ লাখ ২৭ হাজার ৩০৪ জন সুস্থ হয়ে উঠলেও ৩৭ লাখেরও বেশি সক্রিয় রোগীর চাপে দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে।

হাসপাতালগুলোতে শয্যা সংকটের কারণে অনেকে বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন, অনেকে বিনা চিকিৎসায়ই মারা যাচ্ছেন। এর মধ্যে হাসপাতালগুলোতে তীব্র অক্সিজেন সংকটেও বহু রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

৫১ লাখ ৩৮ হাজারেরও বেশি সনাক্ত রোগী নিয়ে মহারাষ্ট্র ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে সবার উপরে থাকলেও এদিন রাজ্যটির প্রধান শহর মুম্বাইয়ে প্রায় দুই মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন রোগী শনাক্ত হয়েছে।

মহারাষ্ট্রের পর কর্নাটক, কেরালা, উত্তর প্রদেশ, তামিল নাড়ু ও দিল্লি চলতি মহামারিতে সবচেয়ে পর্যদুস্ত হয়েছে।

এদিন কর্নাটকে সবচেয়ে বেশি ৩৯ হাজার ৩০৫ জন নতুন রোগী সনাক্ত হয়েছে। এতে রাজ্যটিতে সনাক্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে ১৯ লাখ ৭৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এদিন আরও ৫৯৬টি মৃত্যু নিয়ে রাজ্যটিতে মোট মৃতের সংখ্যা ১৯ হাজার ৩৭২ জনে দাঁড়িয়েছে।

সোমবার পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে ১৯ হাজার ৪৪ জন করোনাভাইরাস রোগী সনাক্ত হয়েছে। এতে রাজ্যটিতে মোট রোগীর সংখ্যা ১০ লাখ ১২ হাজার ৬০৪ জনে দাঁড়িয়েছে।

এদিন আসামে ৫৮০৩ জন নতুন রোগী সনাক্ত হয়েছে ও ৭৭ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

সংক্রমণের ধারাবাহিকতায় ছেদ ঘটাতে দিল্লি ও হরিয়ানা লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছে। চলতি সপ্তাহে ভারতের রাজধানীতে মেট্রো পরিষেবা বন্ধ থাকবে। উত্তর প্রদেশে ২০ মে পর্যন্ত স্কুল বন্ধ থাকবে।

তামিল নাডুতে ঘোষিত দুই সপ্তাহের লকডাউন সোমবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে।

সোমবার বিহারের বক্সার এলাকায় গঙ্গা নদীর তীরে বহু লাশ ভেসে এসেছে। লাশগুলো করোনাভাইরাস রোগীদের বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

করোনাভাইরাসের দ্রুত ছড়িয়ে পড়া ভারতীয় ধরনটিকে ‘বিশ্বের উদ্বেগ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ।

0 Shares