Home » জাতীয় » তামাক নিয়ন্ত্রণে কোম্পানি থেকে সরকারের বিদ্যমন শেয়ার প্রত্যাহার করতে হবে,-মোজাফফর হোসেন পল্টু.

তামাক নিয়ন্ত্রণে কোম্পানি থেকে সরকারের বিদ্যমন শেয়ার প্রত্যাহার করতে হবে,-মোজাফফর হোসেন পল্টু.

 

মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন:- সরকারের ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের প্রত্যয় হুমকির সম্মুখীন। এর প্রকৃত উদাহরণ, বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে তামাক কোম্পানি নিজস্ব অর্থায়নে স্মোকিং জোন তৈরি করে দিচ্ছে। এছাড়াও কোম্পানিগুলো তামাকের সপক্ষে গবেষণা ও বিজ্ঞাপন প্রদর্শনসহ বিভিন্ন উপায়ে তাদের পণ্যের প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কারণ, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৪৯ শতাংশই তরুণ। একজন তরুণকে এই নেশায় আকৃষ্ট করা সম্ভব হলে কোম্পানির জন্য একজন দীর্ঘমেয়াদি ভোক্তা তৈরী হয়। উল্লেখ্য, Global Youth Tobacco Survey- 2013 অনুসারে, বাংলাদেশের ১৩-১৫ বছর বয়সীদের মধ্যে ৫% তামাকজাত দ্রব্য গ্রহণ করে। এই সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। উল্লেখিত সমস্যাসমূহ থেকে উত্তরণের জন্য সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের বাস্তবায়ন প্রয়োজন।

উক্ত বিষয় বিবেচনায় ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এবং বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা) যৌথভাবে ১৮ মে ২০২২, সকাল ১১.০০ টায়, জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘‘তারুণ্যের সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা’’ শীর্ষক একটি মতবিনিময় সভা আয়োজন করে। ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট’র পরিচালক গাউস পিয়ারীর সভাপতিত্বে এবং স্বাস্থ্য অধিকার বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সৈয়দা অনন্যা রহমানের সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট’র প্রকল্প কর্মকর্তা সামিউল হাসান সজীব। প্রবন্ধ উপস্থাপনায় তিনি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলায় বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।

উক্ত সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের (এনটিসিসি) সমন্বয়কারী (অতিরিক্ত সচিব) হোসেন আলী খোন্দকার, বাংলাদেশ জাতীয় যক্ষা নিরোধ সমিতির (নাটাব) সভাপতি ও বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের (বাটা) উপদেষ্টা মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু, দি ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী হেলাল আহমেদ এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: শিহাব উদ্দীন।
হোসেন আলী খন্দকার বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন এবং FCTC-5.3 এর আলোকে খসড়া গাইডলাইন চূড়ান্ত করা হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে কর্মরত সংগঠনগুলোকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি চূড়ান্ত করণের পাশাপাশি নীতিমালা তৈরির প্রক্রিয়া চলমান আছে।

আইনজীবী ও নীতি বিশ্লেষক সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন বলেন, বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে ঢাকা শহরের বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় স্থাপিত রেস্টুরেন্টগুলোতে তামাকের প্রতি তরুণদেরকে আকৃষ্ট করতে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ আলাদা স্মোকিং জোন তৈরি করে দিচ্ছে। তিনি এই কোম্পানিকে সরাসরি জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান।

মোজাফফর হোসেন পল্টু বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে কোম্পানি থেকে সরকারের বিদ্যমান শেয়ার প্রত্যাহার করতে হবে। জনগণকে তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্বন্ধে সচেতন করতে প্রচার প্রচারনা বাড়াতে হবে। পাবলিক প্লেসে ধূমপানরত ব্যক্তির জরিমানার ৫০% দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে প্রদানের ব্যবস্থা করলে তামাক নিয়ন্ত্রণে এটি বড় ভূমিকা রাখবে।

সভায় আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন ভাইটাল স্ট্রাটেজিস বাংলাদেশের হেড অফ প্রোগ্রাম বাংলাদেশের শফিকুল ইসলাম, এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক সাগুফতা সুলতানা, উবিনিগের পরিচালক সীমা দাশ শিমু, ব্যুরো অফ ইকোনোমিকস রিসার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোগ্রাম ম্যানেজার (তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প) হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, টিসিআরসির প্রোগ্রাম ম্যানেজার ফারহানা জামান লিজা, নাটাবের প্রকল্প সমন্বয়কারী একেএম খলিল উল্লাহ, আইডিএফের চেয়ারম্যান এস.এম. শফিউল আযম, নবনীতার নির্বাহী পরিচালক আতিকা হোসেন, কেরানীগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির প্রধান নির্বাহী সৈয়দা শামীমা সুলতানা, কসমসের মেহনাজ পারভীন, বাংলাদেশ গার্লস গাইড এসোসিয়েশানের ট্রেজারার খায়রুন নাহার শিল্পী, সিসিডিএফের সুব্রত দত্ত সহ বেশ কয়েকটি সংগঠনের কর্মকর্তা ।

0 Shares