Home » প্রকৃতি » প্রকৃতি ও জীবন পাতা’র প্রার্থনা গল্প

প্রকৃতি ও জীবন পাতা’র প্রার্থনা গল্প

আপনারা যখন সবাই ঘুমিয়েছিলেন । তখন সূর্যটা আমাদের দিকে । প্রার্থনারত পাতা গুলো তখন সচকিত । গভীর রাতে বড় আকারের লরী ট্রাক থেকে নামিয়ে রেখেছে নার্সারির করিডোরে । বিভিন্ন জাতের ফুল ও ফলের চারা সারিবদ্ধভাবে রেখেছে সযত্নে। সাত সকালে সূর্যের আলোকছটার আলোতে প্রার্থনা পাতা গুলো সূর্যের আলোর সাথে যেন রশ্নিখেলে । প্রাথনা পাতা ছোট গাছটির একটি অংশ । যার আয়তন স্থির । পাতার ফলকের আকার চ্যাপ্টা এবং পাতলা । প্রতিটি পাতায় সম অধিকারের সৃষ্টিকর্তার সৌন্দর্যের রেখা টান । সূর্যের আলো কোষকলা ভেদ করে পাতার সমস্ত কোষে সূর্যের রশ্মী উত্তাপ দিচ্ছে ।


এ গাছটিকে ক্যাথলিক ও জুঁই সম্প্রদায় পবিত্রতম বলে মনে করে । এ গাছটিকে তারা সাধারণত “প্রার্থনা গাছ” বলে থাকে । ইংরেজিতে “prayer plants”, বলে। এ গাছের আরো কয়েকটি সিমিলার বংশ রয়েছে ।
যাইহোক আমি ক্যাথলিক এক ধর্ম যাজককে জিজ্ঞেস তরেছিলাম , কেন এ পাতা কে প্রার্থনা পাতা বলে ? তিনি বলেছেন , এ পাতা সকাল ও সন্ধ্যায় দু সময়ে উত্থিত হয় এবং মনে হয় তারা প্রার্থনা করছে। তাই ক্যালাথিয়া, উপরের পরিবারের একটি বংশ যা “প্রার্থনা গাছ” বলে।
ম্যারান্টা ক্রান্তীয় মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্থানীয় ম্যারান্টেসি পরিবারে ফুলের উদ্ভিদের বংশ। ইতালির চিকিৎসক এবং ষোড়শ শতাব্দীর উদ্ভিদবিজ্ঞানী বার্তোলোমিও মারান্টার নামেই মারান্টার নামকরণ করা হয়েছিল। প্রায় ৪০-৫০ প্রজাতি বর্তমানে স্বীকৃত । এগুলির প্রাকৃতিকভাবে বহুবর্ষজীবী ক্লাম্প তৈরি হয়। জনাকীর্ণ ডিম্বাকৃতি, চিরসবুজ পাতাগুলি মেশানো ডালপালা দিয়ে অবিভক্ত থাকে। দিন শেষ হওয়ার সাথে সাথে পাতাগুলি সমতল হয় এবং ভাঁজ হয়ে যায়, সুতরাং সাধারণ নাম “প্রার্থনা উদ্ভিদ” যা জেনাস এবং এর প্রজাতির সাথে যুক্ত – বিশেষত এম। লিউকোনিউরা।ফুলগুলি তিনটি পাপড়ি এবং দুটি বড় পাপড়ির মতো স্ট্যামিনোডসহ ছোট আকারে থাকে ।


আমি প্রাত:ভোরে নার্সারিতে গেলাম । এ গাছের চারা এবং পাতার বহর দেখতে । প্রতিটি চারা ২৪/৩৫ ডলারে বিক্রি করে ।
আমাদের দেশে এরকম গাছ ও লতা গুল্ম রয়েছে । যা সূর্যডুবার সাথে সাথে ঘুমিয়ে পড়ে কিংবা প্রার্থনা করে। একে আমরা লজ্জাবতী গাছ বলি ।
লজ্জাবতী গাছের অনেক ধরণের ঔষধি গুণ রয়েছ। আবার কেউ কেউ একে বলেন লাজুক লতা। লজ্জাবতী, স্থানীয়ভাবে একে লজ্জাবতী, সমঙ্গা, লজ্জালু, অঞ্জলিকারিকাও বলা হয়। পরিচয় বর্ষজীবী গুল্ম আগাছা বা ঔষধি গাছ। কাণ্ড লতানোও শাখা প্রশাখায় ভরা এবং কাঁটাযুক্ত। এ গাছ লালচে রংয়ের। এ গাছের কাণ্ড কিছুটা শক্ত। সহজে ভাঙ্গে না বরং পেঁচিয়ে টানলে ছিড়ে যায়। পাতা কয়েক জোড়া পাতা বিপ্রতীপভাবে থাকে। অনেকটা তেঁতুল পাতার মত। হাত ও পায়ের স্পর্শে লজ্জ্বাবতীর পাতা বুঁজে এসে বন্ধ হয়ে যায়। পাতা সরু ও লম্বাটে, সংখ্যায় ২ থেকে ২০ জোড়া। উপপত্র কাঁটায় ভরা। এর পাতা ও ফুল ব্যবহার করা হয়। এর অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে।
আরেক ধরনের গাছ রয়েছে শিশু গাছ বা মিজ্জ্রী গাছ বলি । যার পাতা গুলো সূর্য ডুবার সাথে সাথে ঘুমিয়ে পড়ে । এই শিশু( Shishu) গাছ একটি বহু বর্ষজীবী উদ্ভিদ। শাখা- প্রশাখা বিশিষ্ট বৃহৎ গাছ। এই গাছ ৪০-৫০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। ছাল ধূসর বর্ণের ও অমসৃণ, পুরনো হলে লম্বালম্বিভাবে কাটা কাটা দাগ হয়। এ দুটো গাছের পাতা বিকাল হলে ঘুমিয়ে যায় । তো জানি না এ পাতা প্রার্থনা করে না ঘুমিয়ে থাকে ।
সাইয়িদ মাহমুদ তসলিম / ওয়েস্ট নিউ ইয়র্ক

0 Shares