Home » জাতীয় » বঙ্গবন্ধু সবসময় একটি সুস্থ-সবল,বলিষ্ট জাতিকে দেখতে চেয়েছিলেন– জাহিদ ফারুক

বঙ্গবন্ধু সবসময় একটি সুস্থ-সবল,বলিষ্ট জাতিকে দেখতে চেয়েছিলেন– জাহিদ ফারুক

 

বরিশাল :

পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবসময় একটি সুস্থ-সবল,বলিষ্ট জাতিকে দেখতে চেয়েছিলেন। তার জেষ্ঠ্য পুত্র শেখ কামালও খেলাধুলার প্রতি খুব আগ্রহীশীল ছিলেন। সেজন্য তিনি আবহনী ক্লাব ক্রিড়া চক্রটি গঠন করেন। আসলে একটা জাতির মেরুদণ্ড সঠিক থাকে সেই দেশের মানুষের সুস্থ-সবল থাকার ওপরে। একটা সুস্থ জাতি মানে হলো সেই দেশের উন্নয়ন এবং একটা অসুস্থ জাতি হলো মানেই তারা আর উন্নয়ন করতে পারবে না। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিলো বাংলাদেশকে সোনার বাংলা গড়ার, যে লক্ষ্যে তিনি সারাটাজীবন কাজ করে গেছেন। আর এখন সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছেন। বিগত ১৩ বছরে তার কারণে আজ আমরা বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ আমরা লক্ষ্য স্থির করেছি ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের ভেতরে সমৃদ্ধ শালীর দেশে পৌঁছাবে। আর এ লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে একটা সুস্থ-সবল জাতির প্রয়োজন।

আজ বরিশাল নগরীর বন্দরোডস্থ শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত আউটার স্টেডিয়ামে বরিশাল বিভাগীয় পর্যায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, বালক (অনূর্ধ্ব-১৭) ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, বালিকা (অনূর্ধ্ব-১৭)-২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী জাহিদ বলেন,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০১৮ সালে শুরু করা হয়। দেশের কিশোর-কিশোরীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর জন্যই এ খেলার আয়োজন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ফুটবল খেলার জন্য সবথেকে বেশি শারীরিক যোগ্যতার প্রয়োজন হয়।যারা ফুটবল খেলা পছন্দ করে বা খেলছে তারা অন্যান্য যে কোন খেলোয়ারের থেকে বেশি শারীরিকভাবে উন্নতমানের হয়। আমাদের যুব সমাজের জন্য খেলাধুলাটা অনেক দরকার।ইন্টারনেটের যুগে যুব সমাজসহ সব বয়সী মানুষের ইন্টারনেটের প্রতি ঝোক রয়েছে। কিন্তু বেশি ঝোক থাকে কিশোর-কিশোরীদের, তাই বেশিরভাগ ছেলে-মেয়ে ক্লাশের বাইরে সময় পেলেই খেলাধুলা না করে ইন্টারনেটের পেছনে সময় ব্যয় করে। ট্যাব-মোবাইল-ইন্টারনেট সবকিছুরই দরকার রয়েছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশে পৌঁছেছি, আমরা আরও সমদ্ধশালী দেশের কাতারেও পৌঁছাবো।

আমাদের দেশ-বিদেশের সম্পর্কে জানতে হবে। আজকাল লেখাপড়া করতেও ইন্টারনেটের প্রয়োজন হচ্ছে। আগে যা আমরা লাইব্রেরিতে গিয়ে জানতাম, তা এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসেই জানা যাচ্ছে। তাই এটার দরকার আছে, তবে দরকার থাকলেও মনে রাখতে হবে শারীরিক উৎকর্ষতা এবং শারীরিক যোগ্যতার খুবই প্রয়োজন। শারীরিকভাবে সুস্থ না থাকলে আমরা বেশিদিন ইন্টারনেটেও দেখতে পারবো না। চোঁখে ও মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। সুতরাং সবকিছুর মাঝে ব্যালেন্সের প্রয়োজন আছে। আমি আহবান করবো আজ যারা খেলাধুলায় আগ্রহী আছো, তোমাদের দেখে যেন সবার আগ্রহ বাড়ে। যাতে তাদের মানসিক বিকাশ ঘটে,মনের ভেতর প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব সৃষ্টি হয় এবং কর্মজীবনে যেটা সবাইকে অনেক সাহায্য করবে। আজ গোটা দুনিয়াটাই হলো প্রতিযোগিতামূলক। যে ঘরে বসে থাকবে তার বাড়িতে কোন দিন সাফল্য নিয়ে আসবে না।

অভিভাবকদের প্রতি আবহান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনাদের সন্তানদের পড়াশুনার সাথে সাথে খেলাধুলার প্রতিও আগ্রহী করুন। মনে রাখবেন যারা খেলাধুলা করে তারা মাদক থেকে দূরে থাকে। আজ আমরা সমাজে মাদকের প্রভাব বিস্তার পাচ্ছে, বরিশালও এ থেকে নিস্তার পায়নি।চারদিকে মাদকের ছড়াছড়ি। এজন্য ছেলে-মেয়েরা যত খেলাধুলার প্রতি আকৃষ্ট থাকবে, ততোই তারা মাদক থেকে দূরে থাকবে।

পুলিশ প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের ওপর নির্ভর করে ভবিষ্যত। আপনারা যদি মাদকের ছোবল থেকে আমাদের কিশোর-কিশোরীদেরকে বাঁচাতে পারেন, তাহলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা পৌঁছাতে পারবো। সেখানে আপনাদের ওপর বিশাল গুরু দায়িত্ব রয়েছে। মাদকের আখড়াতে রেট করবেন, এর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনুন। যাতে করে তারা সমাজের ভেতর মাদক ছড়িয়ে দিতে না পারে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফুটবলে বরিশালের ঐতিহ্য ছিলো। আজ গোটা দেশ থেকে পর্তুগাল এবং ব্রাজিলে ছেলে-মেয়েদের পাঠানো হচ্ছে, কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের বরিশালের কেউ নেই। আমি আশা করবো ভবিষ্যতে তোমারাও যেতে পারবে, সেভাবে নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে।তোমাদের মনে রাখতে হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা তিনি বাস্তবায়ন করেছিলেন। তিনি স্বাধীন দেশ চেয়েছিলেন বাঙ্গালি জাতির জন্য আর তা তিনি দিয়েছেন, তার কন্যা শেখ হাসিনা স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলাদেশ সমৃদ্ধশালী হবে, আর আজ আমরা সে পথে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ এই পদ্মা সেতুর জন্য তার কাছে সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো। আমরা অবহেলিত ছিলাম, আমাদের ঢাকায় যেতে কত কষ্ট, সময় ব্যয় করতে হতো এখন আর তা লাগবে না। আজ তার জন্য গোটা বরিশাল বিভাগে বিভিন্ন ধরণের উন্নয়ন হয়েছে, হচ্ছে। তাই তোমাদেরও লক্ষ্য স্থির করতে হবে, যাতে তোমরাও সে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারো।

বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আমিন উল আহসান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) মোহাম্মদ এনামুল হক, বরিশালের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব)খোন্দকার আনোয়ার হোসেন, বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার, বিসিবিব পরিচালক আলমগীর খান আলো, জেলা ক্রীড়া অফিসার হোসাইন আহমেদ।

জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের খেলোয়াড়বৃন্দদের উপস্থিতিতে শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের পাশাপাশি জাতীয় পতাকা উত্তলন করেন প্রধান অতিথি। পরে সংক্ষিপ্ত এক আলোচনা সভা শেষে বেলুন ফেস্টুন উড়িয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু বঙ্গমাতা জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করবেন প্রধান অতিথি। পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

বরিশালের ৬ টি জেলার সমন্বয়ে ৬টি বালক ও ৬টি বালিকাসহ মোট ১২টি দল বিভাগীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করবে। খেলা ৪ জুন থেকে ৭ জুন পর্যন্ত এ টুর্নামেন্টের খেলা চলবে। আজ উদ্বোধনী ম্যাচে (বালক) এবং (বালিকা) বরগুনা জেলা ও ঝালকাঠি জেলার খেলা অনুষ্ঠিত হয়।

 

 

 

 

 

-Press Release

0 Shares