Home » সারাদেশ » রাজাপুরে নারী উদ্যেক্তার উন্নত দুগ্ধ খামারের স্বপ্ন নষ্ট হতে চলেছে কুচক্রিদের হয়রানিতে

রাজাপুরে নারী উদ্যেক্তার উন্নত দুগ্ধ খামারের স্বপ্ন নষ্ট হতে চলেছে কুচক্রিদের হয়রানিতে

 

কামরুল হাসান মুরাদ, ঝালকাঠি : ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার মাহফুজা আক্তার নামের এক নারী উদ্দ্যোক্তা একটি উন্নতমানের দুগ্ধ খামারী স্থাপন করলেও একটি কুচক্রি মহলের হয়রানিতে নষ্ট হতে চলেছে। নিজস্ব উৎপাদনে দুধের ঘাটতি পূরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে উপজেলার গালুয়া গ্রামের বাড়িতে এ খামার স্থাপন করে কুচক্রীদের উৎপাতে হিমশিম খাচ্ছেন। বড় ধরনের এ্যাগ্রো ফার্ম করার স্বপ্ন নিয়ে কাজ শুরু করে এখোন স্বপ্ন গুটিয়ে নিবেন কিনা তাই ভাবছেন বলে ভারাক্রান্ত কণ্ঠে নারী উদ্দ্যোক্তা মাহফুজা আক্তার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

সরেজমিন পরিদর্শনকালে উদ্দ্যোক্তা মাহফুজা আক্তার জানান, ভাইয়ের ছেলে কোয়াব বাংলাদেশের সহসভাপতি সৈয়দ রোকনুজ্জামান খোকনের সহায়তায় তিনি গালুয়া ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে “জেনারেল এ্যাগ্রো পার্ক” গড়ে তোলেন। দেড় বছর আগে ১০টি গাভী নিয়ে যাত্র শুরু করা বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ান, পাকিস্তানি শাহীওয়াল ও দেশী প্রজাতির ৭০ টি গরু রয়েছে।’গরুর পাশাপাশি ছাগল এবং কবুতরের বড় খামার বানানোর পরিকল্পনা রয়েছে।’ কোন প্রকার ওষুধ বা হাইব্রিড পদ্ধতি মুক্ত এ খামারের গরু লালন-পালনের প্রয়োজনীয় আধুনিক পাকা ভবন, রাত্রী যাপন শেড ও লোহার সীমানা প্রাচীর দেয়া উঠান নির্মাণ করায় গবাদী পশুগুলো দিন-রাত অবাধে বিচরণ করতে পারে। পাশেই একর জমিতে “নেপিয়ার পারচুন” নামের বিদেশি জাতের ঘাসের চাষ ও রংপুর থেকে ভুট্টার সাইলেস এনে মজুদ রাখা হয়েছে গাভীকে খাওয়ানোর জন্য। খাদ্যের এ ভিন্নতার কারণে বর্তমানে ১০টি গাভীতে প্রতিদিন ১শ থেকে ১শ ১০ কেজি দুধ উৎপাদন হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে পশুগুলোর পরিচর্যার জন্য ৮ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছে।

খামারের শ্রমিক মো. ইউনুস মিয়া জানান, প্রতিদিন ৪ বার গরুগুলো গোসল করানো, দুধ সংগ্রহ, পর্যাপ্ত পানি ও খাবার খাওয়ানো কাজ করেন। পাশাপাশি বিকল্প জ্বালানির জন্য গোবর দিয়ে বায়োগ্যাস প্লান্ট প্রকল্প প্রক্রীয়াধীন রয়েছে। প্রতিদিন খামারের ভিতর-বাহিরের দুবার জীবাণু নাশক দিয়ে পরিষ্কারসহ পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হচ্ছে।

এলাকার সম্ভ্রান্ত পরিবার সৈয়দ আন্তাজ উদ্দিনের মেয়ে নারী
উদ্দ্যোক্তা সৈয়দা মাহফুজা আক্তার আক্ষেপ করে বলেন, ‘এলাকার একটি দুষ্ট চক্র শুরু থেকে প্রতিটি কাজে বাধা দিয়ে আসছে। প্রাথমিক পর্যায়ে কয়েক লাখ টাকা দান-সাহায্য করেছি, এখনো নিয়মিত চাঁদা চাচ্ছে। এমন কি তারা হয়রানি করতে মামলা-হামলা ও হুমকির আশ্রয় নিচ্ছে। এসবের কারণে খামার পরিচালনার
আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি। প্রাণিসম্পদ বিভাগ, পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতা না পেলে এ প্রকল্প করতে পারবো কিনা জানিনা।

এ বিষয়ে গালুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া পারভেজ বলেন, ‘নারী উদ্যেক্তা যেই দুগ্ধ খামার করেছে তার প্রত্যয়ন আমি দিয়েছি। এটি এলাকার দুগ্ধ চাহিদা পূরন করবে। কিন্তু কে বা কারা তাকে বাঁধা দিচ্ছে বা চাঁদা চাচ্ছে এ বিষয়টি আমার নলেজে নেই।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা, দীনেশ চন্দ্র মজুমদার বলেন,
প্রাণিসম্পদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর হচ্ছে ডেইরি খামার। সাহসী নারী উদ্যেক্তা মাহাফুজা আক্তার রাজাপুরে ছোট বড় প্রায় ৯৩ টি ডেইরি খামারের মধ্যে জেনারেল এগ্রো পার্ক নামের খামারটি সম্পূর্ণ আধুনিক ব্যবস্থায় গড়ে তুলেছেন। এধরনের একটি খামারে স্থানীয় কুচক্রিদের বিগ্ন সৃষ্টি করা দুঃখজনক। আমাদের পক্ষ থেকে এই নারী উদ্দোক্তা মাহাফুজা আক্তারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো। আমার ধারনা খামারটি সঠিকভাবে পরিচালিত হলে
বরিশাল বিভাগের মধ্যে সেরা খামারের স্থান অর্জন করবে এই নারী উদ্যেক্তা।

0 Shares