Home » জাতীয় » সচেতনতার অভাবে শত শত টন জৈব সার যাচ্ছে চুলায়

সচেতনতার অভাবে শত শত টন জৈব সার যাচ্ছে চুলায়

সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) : জৈব সার গবর দিয়ে গইঠা ও গুল তৈরির ধুম পড়েছে কাউনিয়া উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের গ্রাম গুলোতে। প্রাণিসম্পদ বিভাগের উদাসিনতায় প্রতিদিন শতশত টন জৈব সার যাচ্ছে চুলায়। এ যেন দেখার কেউ নেই।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, গ্রামের দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ গুলো জৈব সার গোবর বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করে তা দিয়ে গইঠা ও গুল তৈরি করে তা শুকিয়ে নিজেদের জ্বালানির চাহিদা মিটিয়ে বাকি গুলো বিভিন্ন হোটেল-রেস্তরাঁয় বিক্রি করে বার্তি আয় করছে। নিম্ন আয়ের গৃহস্থবাড়িতে সকাল-বিকাল গোবরের গইঠা ও গুল তৈরি করে রোদে শুকাতে দিচ্ছেন নারীরা। এতে নিজেদের ঘরের চুলা জ্বালানোর পাশাপাশি বাড়তি আয়ও হচ্ছে। কেউ কেউ গইটা ও গুল বিক্রি পেশা হিসেবে নিয়েছেন। তারা গরুর খামারিদের কাছ থেকে গোবর কিনে নিয়ে তা দিয়ে গুল ও গইঠা তৈরী করে বাজারে বিক্রি করছে।

আরও পড়ুন :

কাউনিয়ায় থানায় ইউএনও এর বিদায় ও নবাগতর বরণ অনুষ্ঠান

কাউনিয়ায় বিদায়ী ইউএনও কে প্রত্যাশার আলো পত্রিকার সম্মাননা স্মারক

 

 

এতে স্বাবলম্বীও হচ্ছেন অনেকে। উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামেই গইঠা ও গুল তৈরির দৃশ্য চোখে পড়ে। উপজেলার যে কোন গ্রামে গেলেই দেখা যায় রাস্তার ধারে গইঠা সারি সারি ভাবে শোভা পাচ্ছে। পাটকাটি, বাঁশের ঝিক, গাছের চিকন ডালপালায় বিশেষ কৌশলে গোবর লাগিয়ে তৈরি করা হচ্ছে গইঠা ও গুল। এর ফলে কাউনিয়া উপজেলায় প্রতিদিন শতশত টন জৈব সার চলে যাচ্ছে চুলায়। হরিশ্বর তকিপল বাজার গ্রামের সুফিয়া খাতুন. সখিনা, বেগম জানান, আমাদের গরু নাই, সারাদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে গোবর কুড়িয়ে এনে এবং খামারিদের কাছ থেকে কিনে এন গইঠা বানাই এবং তা শুকিয়ে বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে চলে সংসার। তারা জানান, প্রতিটি গোবরের গইঠা সর্বনিম্ন ১টাকা দরে বিক্রি হয়। গইঠা ও গুলের সাহায্যে আমরা বছরের বেশিরভাগ সময় চুলা জ্বালাই। অনেকে বাড়তি গইটা ও গুল বিক্রি করে। সাব্দি গ্রামের কিশোরী বালা জানান, হামার জমি নাই তাই ২টি গরুর গোবর দিয়ে গইঠা বানিয়ে জ্বালানির চাহিদা মিটাই। স্থানীয় কৃষক প্রহলাদ চন্দ্র জানান, গরুর গোবর চাষিদের কাছে আশীর্বাদ। পর্যাপ্ত গরুর গোবর দিতে পারলে সবজি ক্ষেতে রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হয় না বললেই চলে। কিন্তু খামারিদের গরুর গবর নিয়ে প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও কৃষি বিভাগ থেকে সংরক্ষণ করার ব্যাপারে তেমন কোন উদ্যোগ না থাকায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে গোবর জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। গইঠা ও গুল তৈরি এখন কাউনিয়া পল্লী অঞ্চল গুলোতে জনপ্রিয় হয়েছে বলে জানা গেছে। গরুর গোবর জৈব সার সংরক্ষণে সরকারি ভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে বিজ্ঞ মহল মনে করছেন।

0 Shares