আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বিভ্রান্ত করছে তারই উপদেষ্টারা এবং তারা ইউক্রেন যুদ্ধের অবস্থা যে কত খারাপ তা পুতিনকে বলার সাহস পাচ্ছেন না – বলছে হোয়াইট হাউস।
হোয়াইট হাউস বলছে, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাগুলো রুশ অর্থনীতির ওপর কতটা বিরূপ প্রভাব ফেলেছে তার পূর্ণ বিবরণ পুতিনকে জানানো হচ্ছে না।
তবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এ খবরের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বা পেন্টাগনের হাতে “কি ঘটছে সে ব্যাপারে আসল তথ্য নেই।” তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র পুতিনকে বোঝে না।
তবে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কেট বেডিংফিল্ড বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এমন তথ্য পেয়েছে যে ‘ পুতিন মনে করছেন তিনি রুশ সামরিক বাহিনীর দ্বারা বিভ্রান্ত হচ্ছেন।’ এর ফলে পুতিন এবং তার সামরিক নেতৃত্বের মধ্যে ‘সার্বক্ষণিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।’
তিনি বলেন, “পুতিনের এ যুদ্ধ ছিল কৌশলগতভাবে একটি মারাত্মক ভুল। এর ফলে রাশিয়া দীর্ঘমেয়াদে দুর্বল হয়ে পড়ছে, এবং তারা বিশ্বের দরবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে।”বিবিসি
পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কারবি বলেন, এসব মূল্যায়ন অস্বস্তিকর কারণ পুতিনের যদি কি হচ্ছে তা অজানা থাকে – তাহলে শান্তি আলোচনার মাধ্যমে সংঘাত বন্ধের প্রয়াস বিশ্বাসযোগ্য হবে না, এবং খারাপ খবরের ব্যাপারে একজন নেতার প্রতিক্রিয়া কি হবে, তাও জানা যাবে না।”
ব্রিটিশ গোয়েন্দা সূত্রগুলোও বলছে, ইউক্রেনে রুশ সৈন্যরা হতোদ্যম হয়ে পড়েছে – তাদের সরঞ্জামের ঘাটতি রয়েছে এবং তারা আদেশ পালন করতে অস্বীকার করছে।
ব্রিটিশ সাইবার গোয়েন্দা সংস্থা জিসিএইচকিউ-এর প্রধান জেরেমি ফ্লেমিংও বলেন, কিয়েভ ও চেরনিহিভের আশপাশ থেকে সামরিক কার্যক্রম কমানোর যে কথা রাশিয়া ঘোষণা করেছে – তাতে আভাস পাওয়া যায় যে রাশিয়া পরিস্থিতি বুঝতে বড় ভুল করেছে এবং নতুন করে চিন্তা করতেও বাধ্য হয়েছে।
ক্রেমলিনের প্রতিক্রিয়া : যুক্তরাষ্ট্র পুতিনকে বোঝে না
কিন্তু ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ক্রেমলিনের ভেতরে কি হচ্ছে তা যুক্তরাষ্ট্র বোঝেই না।
“তারা প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বোঝে না, কীভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, এবং আমরা কীভাবে কাজ করি- তা বোঝে না,” বলেন তিনি।
পেসকভ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এটা চিন্তার বিষয় কারণ এরকম গুরুতর ভুল বোঝার ফলে ভুল সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, যার পরিণতিও হয় খারাপ।
ইউরোপকে গ্যাস কিনতে হবে রুবলে: পুতিন
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেছেন যে, আগামিকাল শুক্রবার থেকে যেসব বিদেশি ক্রেতাকে রাশিয়ার গ্যাসের দাম রুবলে পরিশোধ করতে হবে, এবং তা না করলে তাদের চুক্তি বাতিল করে দেয়া হবে।
পুতিন বলেন, রাশিয়ার প্রতি ‘অবন্ধুসুলভ’ দেশগুলোকে একটি রাশিয়ান ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে এবং রুবলে গ্যাস কিনতে হবে, তা না হলে সেখানে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হবে।
ইউক্রেনে রুশ অভিযানের কারণে আরোপিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার ফলে রুবলের মূল্যমান ব্যাপক পড়ে গেছে এবং মনে করা হচ্ছে যে রুবলে গ্যাসের মূল্য পরিশোধ করতে বাধ্য করলে এর অধোগতি ঠেকানো যাবে।
জবাবে জার্মানির অর্থমন্ত্রী রবার্ট হাবেক বলেছেন, রাশিয়া তাদের দেশকে ব্ল্যাকমেইল করতে পারবে না।
জার্মানি হচ্ছে রাশিয়ার গ্যাসের সবচেয়ে বড় ক্রেতা, এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আমদানি করা গ্যাসের ৪০ শতাংশই আসে রাশিয়া থেকে।
ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী ব্রুনো লে মেয়ার বলেছেন, রুশ গ্যাস সরবরাহ কমে যাবে – এমন পরিস্থিতির জন্য দুটি দেশই তৈরি হচ্ছে।